অগ্নিপথ আর আগুন দিয়া মনকে শান্ত করানো যায় নাকি কখনো — ইহা কি সঠিক উপায় সরকারের! জানিনা, সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র সব মগজাস্ত্র! যতই শান দেই ইহা ততই ভোঁতা হইয়া যাইতেছে। হত্যার আন্দোলনের নামে সরকারি সম্পত্তির তছনছ রূপের প্রকাশ ক্রমশ বাড়িয়া চলিয়াছে। কিছুতেই শান্ত হইতেছে না যুবক সমাজ। সত্যই বড় ভাবনার বিষয় — চারখানি বছরে সরকার কি কি করাইবে এই অগ্নিপথ নামের পরীক্ষায়! এই বিস্ময় লইয়াই সরকারের উচিত হইবে পশ্চাৎপদ হওয়া। তা না হইলে সীমান্তে সন্ত্রাস শুধু সময়ের অপেক্ষা!
স্বল্পদৈর্ঘ্যের নাটক অদেখা অন্ধকার-এর নাটককার হিসাবে এ বৎসর রাজ্য নাট্য আকাদেমির পুরস্কার পাইলেন নাটককার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মহাশয়। নাটককার জানান, মহিষাদল শিল্পকৃতি প্রযোজিত ‘অদেখা অন্ধকার’ প্রথম মঞ্চস্থ হয় ২০২১ সালে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ থেকে ১২ টি অভিনয় হইয়াছে নানা মঞ্চে। প্রতিবারই দর্শকগণের ভালোবাসা ও প্রশংসা কুড়াইয়াছে । নাটকের নির্দেশনা দিয়াছেন সুরজিৎ সিনহা। ইহা একটি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করিয়াছেন সুরজিৎ ও ঐন্দ্রিলা। নাটককার আরো জানাইয়াছেন- পুরস্কারের লাগিয়া মনোনীত হইয়াছে দেখিয়া বড় ভালো লাগিতেছে। ইহা নিঃসন্দেহে নাটক লিখিবার ক্ষেত্রে একখানি বড় স্বীকৃতি লাভ। সেই সঙ্গে দায়িত্বও বাড়িল। তবে আমার সেরা পুরস্কার দর্শকগণের ভালোলাগা ও ভালোবাসা যাহার লাগিয়া অপেক্ষা করিয়া থাকি।
সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় গত শতকের আটের দশকের মাঝামাঝি হইতে ধারাবাহিকভাবে নাট্যচর্চা করিয়া চলিয়াছেন। সংগ্রামজিৎ সেনগুপ্ত, কুন্তল মুখোপাধ্যায়, সমীর বিশ্বাস, অরূপ রায় প্রমুখ নাট্য ব্যক্তিত্বগণের নিকট নাটক লেখা শিখিয়াছেন। তাঁহার লেখা প্রথম নাটক – ‘আড়ালে জাদুকর’, রাজারহাট সব পেয়েছির আসরে তাহা মঞ্চস্থ হইয়াছিল। তবে ‘কালো বাঁশের সাঁকো’ নাটকখানি লিখিয়া সকলের সুনজরে আসেন। এই নাটক ২০০৩ সাল হইতে এই পর্যন্ত অন্তত ৫০০ বার মঞ্চস্থ হইয়াছে । প্রযোজনা করিয়াছে রাধানগর দর্পণ নাট্য সংস্থা। তাঁহার লেখা জনপ্রিয় নাটকগুলির হইলো – ‘প্রজেক্ট মানহাটান’, ‘স্তব্ধ বসন্ত’, ‘জল ঘড়ি’, ‘মহামায়া’, ‘অদেখা অন্ধকার’, ‘সেই স্বপ্নপুর’ প্রভৃতি। ইহা অবধি তিনি ৯৬ খানি স্বল্প দৈর্ঘ্য এবং ৩৫ খানি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের নাটক লিখিয়াছেন।
নাটকে নির্দেশক, অভিনেতা-অভিনেত্রীগণ যেইভাবে প্রচারের আলোয় আসিয়া থাকেন, নাটককারগণকে সেইভাবে তুলিয়া ধরা হয় না। এই বিষয়ে সহমত নাটককার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় বলিয়াছেন, “এটা বাস্তব সত্যি। অনেক ক্ষেত্রে পোস্টারেও নাটককারের নাম থাকে না। নাটককারদের স্বীকৃতির জন্য আমরা অনেকদিন ধরেই লড়াই চালাচ্ছি। নাটকের ক্ষেত্রে নাটককারই মূল মেরুদণ্ড”।
বাংলার সরকারের নতুন নতুন ভাবনার উদয় দেখিয়া বরং মধুর লাগে। এখন আর কেহ অচ্ছুৎ নহে। আকাদেমি পুরস্কার এখন জনমত নির্বিশেষে সকলের প্রাপ্য। ইহার পূর্বে পোড়খাওয়া বামপন্থী নাট্ককার শান্তনু মজুমদার পাইয়াছেন এই পুরস্কার। এই বৎসর সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মহাশয় পাইলেন নাট্য আকাডেমি সম্মান।
বহুকাল ধরিয়া নাটক লিখিয়া জনগণকে এত জাগ্রত করিয়াছেন অথচ এইবার অদেখা অন্ধকার দেখাইয়া একখানি পালক জুটিয়াছে মা মাটি সরকার কতৃক। আমাদিগের পক্ষ হইতে অকৃত্রিম শুভেচ্ছা রহিলো। আপনি আরো আগাইয়া যান আরও লিখুন।