নীলদিগন্ত
শিল্পায়ন স্টুডিও থিয়েটারে মহা সাড়ম্বরে গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যমের নাট্য মিলন উৎসব ২০২২ এর শুভ সূচনা হোলো গত ৪ মার্চ, শাঁওলী মিত্র নামাঙ্কিত মঞ্চে। লতা মঙ্গেশকর , বিরজু মহারাজ, বাপী লাহিড়ী, শাঁওলী মিত্র, শুভেন্দু মজুমদার, কনিষ্ক সেন, সন্ধ্যা মুখার্জী, ওয়াসিম কাপুর, নারায়ণ দেবনাথ, বিজয় ভট্টাচার্য ও অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় এর স্মৃতির উদ্দ্যেশ্যে ১ মিনিট নীরবতা পালন করে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়। দর্শক সাধারণকে সঙ্গে নিয়ে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন হৈমন্তী চট্ট্যোপাধ্যায়, এছাড়া ছিলেন আশিস চট্ট্যোপাধ্যায়, আশিস দাস, কৃষ্ণেন্দু চট্ট্যোপাধ্যায়, শ্যামল দত্ত, প্রদীপ রায় চৌধুরী, অভীক ভট্টাচার্য, বাসুদেব কুন্ডু প্রমুখ বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্বরা ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নৃত্য পরিবেশন করেন আল্পনা সরকার, রাখি বিশ্বাস ও নিকিতা সরকার, এবং গান পরিবেশন করেন দীপা ব্রহ্ম। মঞ্চে উপবিষ্ট সকল নাট্যব্যক্তিত্বকে স্মারক সম্মানে সম্মানিত করা হয়। মূল্যবান বক্তব্য রাখেন মঞ্চে উপবিষ্ট সকল অতিথিবর্গ। নাবিক সম্মানে সম্মানিত করা হয় নাবিক নাট্যমের জন্মলগ্নের প্রথম নাটক ‘অন্ধকারের নীচে সূর্য’ এর অভিনেতা নরেন কুন্ডু কে। পরে দুখানি নাটক মঞ্চস্থ হয়। প্রথম নাটক আমতা পরিচয়ের ‘থ্যাঙ্ক ইউ দাদাজি’, নির্দেশনা ঋতুপর্ণা বিশ্বাস, দ্বিতীয় নাটক গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যমের ‘অথ বৃষ মঙ্গল কথা’, নির্দেশনা ও সামগ্রিক পরিকল্পনা – জীবন অধিকারী। দুটি নাটকই দর্শক সাধারণের মন জয় করে। বিশেষ করে অথ বৃষ মঙ্গল কথায় দর্শকদের মনে আনন্দের জোয়ার এনে দেয়, হাস্যরসে এই সময়ের একটি অন্য রকম প্রযোজনা দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছিল। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সোমনাথ রাহা ও সভাপতি ও নাট্য নির্দেশক জীবন অধিকারী।
দ্বিতীয় দিনে উপস্থিত ছিলেন গোবরডাঙ্গা থানার ওসি মাননীয় কাজল ব্যানার্জী, তিনি নাবিক নাট্যমের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। ওইদিন প্রথমে মুকুলিকা গানের স্কুল পরিবেশন করে বিধায়ক ভট্টাচাৰ্য এর ‘তাহার নামটি রঞ্জনা’ এই বিখ্যাত নাটকটি পাঠ অভিনয় করেন অনিমা দাস ও আস্তিক মজুমদার, পরে হরিপাল আশ্রমিক এর নাটক ‘সেলসম্যান’ মঞ্চস্থ হয়। এই নাটকের নাট্যকার ও নির্দেশক ভাস্কর দাস। ‘সূর্য সন্ধান’ থিয়েটার জঙ্গলমহলের এই নাটকটির নাট্যকার ও নির্দেশক সঞ্জয় আচার্য।
তৃতীয় দিন অর্থাৎ ৬ মার্চ এ প্রথমেই নাবিক সম্মান প্রদান করা হয় মাননীয়া মায়া রাহাকে, তিনি ১৯৭৭ সালে দলের প্রথম নাটকের প্রথম অভিনেত্রী। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ইন্দ্রজিৎ আইচ এবং বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্য। শেষ দিনে হালিশহর ইউনিটি মালঞ্চ এর ‘আত্মকথন’ নির্দেশনায় ছিলেন দেবাশিস সরকার, এবং খড়দহ থিয়েটার জোন এর ‘কাম ব্যাক বিনোদিনী’ নির্দেশক তপন দাস এবং সব শেষে ইমন মাইম সেন্টার অসাধারণ একটি মাইম পরিবেশন করে, যার নির্দেশক ছিলেন ধীরাজ হাওলাদার। সব মিলিয়ে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় এই উৎসবের সফলতা এনে দিয়েছে।
সংস্থার কর্ণধার শ্রী অধিকারী জানান নাবিকের এই কর্মকান্ডের সফলতার পিছনে আছে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা, আদর ও প্রশ্রয়। তিনি আরো জানান নাবিক নাট্যমের প্রতিটি সদস্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই মিলন উৎসবকে সফলতার শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। এখানেই বাংলা থিয়েটার বেঁচে আছে, বেঁচে থাকবে। সমবেত সংগীতের মাধ্যমে শেষ হয় নাট্য মিলন উৎসব।