রাজা | কমল চট্টোপাধ্যায়

রাজা, কি লিখবো ? কেনো লিখবো ? এইরকম লেখার কোনদিন কোনো প্রয়োজন আছে বা হবে, আমরা কেউ ভেবেছি ? এটা বড় কষ্টের, বেদনার । এই যন্ত্রনা নিজের কাছে রাখাই ভালো l তবুও …….

খুব যে ওর সাথে দেখা হতো বা ঘনিষ্টতা ছিলো এমন নয় । কিন্তু অনেক কাজে ওকে কাছ থেকে দেখেছি, কাজ করেছি, আর কাজ করতে করতে কাছে এসেছি, মেলামেশাও বেড়েছিল । আজ থেকে (ঠিক মনে পরছে না ) ১২/১৩ বছর আগে ন্যাজাটে আমার ওয়ার্কশপ করতে ও এসেছিলো । ঐ দুদিন ওয়ার্কশপে আমি বুঝতে পেরেছিলাম, যদি ও টিকে যায়, আমাদের (থিয়েটারের ) সংসারে, তাহলে এই সংসার একটা ভালো, ভদ্র, শিক্ষিত এবং রুচিবান একজন কর্মী পাবে এবং পেলেও তাই । দুর্ভাগ্য আমাদের আমাদের প্রিয় ভাইটিকে আমরা ধরে রাখতে পারলাম না । থিয়েটারের কাজ করতে করতে সে হারিয়ে গেলো । আমার নির্দেশিত নাটকে সে অভিনয় করেছে । তারপর সে আরো ভালো ভালো কাজ করেছে, সংগঠন মজবুত করেছে, সবার ভালোবাসা পেয়েছে এবং দিয়েছে l ঐ অঞ্চল ছাড়িয়ে সে আসতে আসতে আরো অনেক জায়গাতে পৌঁছে যাচ্ছিলো, পরিচিতি, পরিধি বাড়ছিলো । কাজ করছিলো ভালো ভালো । সব শেষ । আর হয়তো তোকে নিয়ে কোনোদিন লিখবো না, কারণ লেখা সম্ভব নয় । সন্তানতুল্ল্য মানুষের মৃত্যুর পর লেখা, এ বড় যন্ত্রণার ।

তুই ঘুমো, যে স্বপ্ন তুই দেখিয়েছিস তোর যোদ্ধাদের, তারা বাস্তব করুক তোর স্বপ্ন, সেখানেই তোর শান্তি, তৃপ্তি। তোর পরিবার তোকে খুঁজবে, তারা পাবে তোকে তোর কাজে, তোর ভালবাসায়, তোর সততায় l কোনো ভাষা নেই সমবেদনা জানানোর, এইরকম একটা তরতাজা মানুষ হঠাৎ করে নেই, হারিয়ে গেলো l কি বলবো, কি লিখবো, মাথায় আসছে না।
কমরেড ভালো থাকিস, শান্তিতে থাকিস, আমাদের দেখাতো হবেই কোনো একদিন।