ভারতীয় নাট্য উৎসবে জমজমাট লাভপুর

বিজয়কুমার দাস

বীরভূমের লাভপুর একটি গঞ্জ হিসাবেই পরিচিত। না গ্রাম, না শহর। সাঁইথিয়া, বোলপুর থেকে যেতে হলে আমোদপুরে নেমে বাস বা অটো ভরসা। আমোদপুর থেকে কাটোয়া যাওয়ার যে একমাত্র ট্রেনটি আছে সেটা লাভপুর পৌঁছয় দুপুর ১২ টার কিছু আগে। এমন একটা গঞ্জেই অনুষ্ঠিত হল ভারতীয় নাট্য মহোৎসব। এই নিয়ে তৃতীয়বার। বর্ণাঢ্য এই নাট্য উৎসবকে কেন্দ্র করে সেজে উঠেছিল ঐতিহ্যবাহী অতুলশিব মঞ্চ। একদা এই মঞ্চে স্বয়ং তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নাটক করেছেন। ১০-১৪ সেপ্টেম্বরের পাঁচ রজনীর এই নাট্য উৎসবের উদবোধন করেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। শুভেচ্ছাসূচক বক্তব্যের পর দেবী বন্দনার উদবোধনের গানও গাইলেন। প্রধান অতিথি জেলার সহকারী জেলা সমাহর্তা কৌশিক সিনহা নাটকের নানা আঙ্গিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা।প্রথম রজনীতে উৎসবের আয়োজক বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনী অবলম্বনে ” আখড়াইয়ের দিঘি” নাটক পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করে।

দ্বিতীয় সন্ধ্যায় গৌহাটি আসামের বি এ গৌহাটি পরিবেশন করে অনুপ হাজারিকার পরিচালনায় হাবিব তনবীরের ” চরণদাস চোর” নাটক। ভাষার ব্যবধান মুছে এই দল নাচে গানে অভিনয়ে অনবদ্য পরিবেশনায় মুগ্ধ করে। তৃতীয় সন্ধ্যায় মোহন রাকেশের লেখা বিজয়কুমার নির্দেশিত “আধে আধুরে” নাটক পরিবেশন করে। এই নাটকে অভিনয় করেন হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের অভিনেত্রী গীতা ত্যাগী। চতুর্থ সন্ধ্যায় বিশ্বজিৎ কুমার সিংহের নির্দেশনায় কলাভবন পূর্ণিয়া পরিবেশন করে “ওয়ান্স এগেইন ” নাটক। শেষ দিন ১৪ সেপ্টেম্বর কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্করের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ধাত্রীদেবতা অঙ্গনে কসবা অর্ঘ্য পরিবেশন করে “নারী ও নাগিনী” পাঠনাটক। সন্ধ্যায় কসবা অর্ঘ্য মণীশ মিত্রর নির্দেশনায় পরিবেশন করে ” আমেরিকান ফুটবল ” নাটক। তার পরেই ন্যাজোট সুন্দরবন মণীশ মিত্রের নির্দেশনাতেই ” দেবীমঙ্গল কাব্য” নাটক পরিবেশন করে। দুটি নাটকই ছিল অনবদ্য প্রযোজনা। প্রতিদিন প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ ছিল নাট্যপ্রেমী দর্শকে। উৎসব কমিটির পক্ষে উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় জানালেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ, প্রত্যহ বৃষ্টি সত্ত্বেও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শকরা এসে প্রেক্ষাগৃহ ভরিয়ে দিয়েছে, এটাই আনন্দের।