অমল আলো নিজস্ব প্রতিবেদন:
অমল আলো বর্ষপূর্তি উৎসবের শেষ দিনও ছিল যথেষ্ট আলোকিত এবং বহু মানুষের সমাগমে আলোড়িত। শেষ দিন অর্থাৎ ২৭ নভেম্বর মধ্যমগ্রাম নটমনের ম্যাক্কোম্যান হতে পারেনি, দলের অভিনেত্রীর সমস্যা থাকায়। পরিবর্তে ক্ষেত্রস্থ হয় নটমনের কৃষ্ণকথা। মূলত শাষকের প্রতি শোষকের বা অসহায়ের ক্রোধকে জাগরণ করতে চেয়েছেন নাট্যের লেখক-নির্দেশক তমাল সেন। কথকের ভূমিকায় সঞ্জীবের অভিনয় নজর কাড়লেও, একা চল্লিশ মিনিট অভিনয়কে টেনে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে মনোটনি তৈরি হয়েছে বারবার। আলো, মঞ্চ, আবহ যথোপযুক্ত কিন্তু নাট্যের শরীরের সঙ্গে তা বারবার অঙ্গ হয়ে মিশে যায় না ফলে মাঝে মাঝেই একঘেয়েমি তৈরি হয়। তবে ফ্লোর এবং সিলিংকে মিনিমালিস্টিক দক্ষতায় দারুণ মিশিয়েছেন মঞ্চপরিকল্পক। তাকে অভিবাদন। নাটক শেষে তমাল সেনের হাতে বই-উপহার তুলে দেন দলেরই সদস্যা অঙ্কিতা চক্রবর্তী। এরপরে শুরু হয় বারাসাত থিয়েটার জোনের নাট্য ঘাসফুলের কবি। সময়োপযোগী আবার শাশ্বত এক গল্পের কাঠামোকে নিজস্ব বয়ানে বুনেছেন নাটককার সুদীপ সিংহ। নাট্য নির্মিতিও তার বলে নাটকাকারের সদিচ্ছার আলো নির্মিতিতে নানা রং এর রোদ ফেলেছে। কবি-সাহিত্যিকদের পুরস্কার প্রাপ্তির পর, সভা, সমিতিতে একের পর এক অধিনায়ক হবার পর অথবা বড় ছোট কাগজের সম্পাদক হবার পর তারা কি লেখা থেকে বিদায় নেন? নাকি লেখা তাকে ছেড়ে চলে যায়? এই গহীন এবং বিপজ্জনক প্রশ্নে মনকে বিষাদসিন্ধুর মধ্যে নিমজ্জিত করে নাট্য শেষ করেন সুদীপ। চারিদিকে তখন নৈঃশব্দ। নাটক শেষে নাট্যমুখের নির্দেশক অভি চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় সুদীপের হাতে বই উপহার তুলে দেন দলের সদস্য সঞ্জীব বক্সী আর এই আয়োজনের রীতি অনুসারে ভাবনা থিয়েটার পত্রিকার সম্পাদক অভীক ভট্টাচার্যের হাতে বই, স্মারক ও উত্তরীয় তুলে দেন সুদীপ সিংহ।
শেষে অভীক ভট্টাচার্য অমল আলো থিয়েটার স্পেসটির প্রভূত প্রশংসা করেন। এই স্পেসকে কেন্দ্র করে শিল্পের নানা দিকের উন্মোচনের কথা তুলে ধরেন। এধরনের উৎসব আগামীদিনে যাতে আরো বেশি বেশি করে হয় সেই প্রত্যাশা নিয়ে শেষ হয় এই আয়োজন।